এই প্রকাশনায় আমরা পদার্থ কাকে বলে এর বিভিন্ন সংজ্ঞা তুলে ধরবো। শেষ পর্যন্ত দেখবেন আশা করি।
আমরা চারপাশে যা কিছু দেখি সবই পদার্থের অন্তর্ভুক্ত। এখানে যা কিছু বলতে সবকিছুকেই বুঝাচ্ছে।আপনি যা কিছুকেই নির্দেশ করেন সবই পদার্থের অন্তর্ভুক্ত।হ্যাঁ, ঠিক তাই। এমনকি আপনি যে গুগল ব্যবহার মোবাইল টিপে এই লেখা গুলো পড়ছেন সেটাও একটা পদার্থের তৈরি।
আপনি জেনে অবাক হবে যে আপনার দেহ বা শরীর অনেক ধরনের পদার্থ দিয়ে তৈরি। ঘড়-বাড়ি , বিদ্যালয় ভবন, বিছানা, ঘড়ি, ক্রিকেট ব্যাট, বল সবই বিভিন্ন রকমের পদার্থ দিয়ে তৈরি।
পদার্থ কাকে বলে?
সাধারণভাবে বলা যায়, যার আকার আছে, ওজন আছে এবং জায়গা দখল করে তাকে পদার্থ বলে। যেমনঃ বই খাতা, কলম, ব্যাগ, পানি, অক্সিজেন ইত্যাদি।
এগুলো প্রত্যেকটির ভর আছে কিন্তু স্থান এবং ক্ষেত্র বিশেষে এদের আকার এবং আয়তন ভিন্ন হয়।
কক্ষ তাপমাত্রা বা সাধারণ তাপমাত্রায় কোনো কোনো পদার্থ কঠিন আবার কোনো পদার্থ তরল আবার কোনো পদার্থ গ্যাসীয় অবস্থায় থাকে।
পদার্থ কি?
আরো বিশদভাবে বলতে গেলে পদার্থ কি বলতে বুঝায়, যা জায়গা দখল করে, যার আকার-আকৃতি ও ওজন আছে এবং বল প্রয়োগে বাধাঁ প্রদান করে তাকে পদার্থ বলে। জেনে রাখো প্রত্যেকটি পদার্থ বল প্রয়োগে বাধা প্রদান করে।
কঠিন এবং তরল পদার্থের উদাহরণ আমরা প্রায়ই দেখি যে এটিকে বল প্রয়োগ করলে বাধার সৃষ্টি করে। কিন্তু বায়বীয় পদার্থের বেলায় মনে পারে অন্য কিছু কিন্তু এটিও বাধা দেয় যদি এটিকে নির্দিষ্ট পাত্রে রাখা হয়।
অবশ্যই পড়ুন,
পদার্থ কত প্রকার ও কি কি?
পদার্থের প্রকারভেদ দুইভাবে করা হয়। একটি অবস্থাভেদে আরেকটি উপাদানভেদে।
অবস্থাভেদে পদার্থের প্রকারভেদঃ
উপাদানভেদে পদার্থ ৩ প্রকার। যথাঃ
১।কঠিন পদার্থ। (Solids)
২।তরল পদার্থ।(Liquids)
৩।গ্যাসীয় বা বায়বীয় পদার্থ(gases)
১। কঠিন পদার্থঃ

কঠিন পদার্থের নির্দিষ্ট আকার থাকে, ভর থাকে, এবং নির্দিষ্ট আয়তন থাকে। এই পদার্থকে বল কিংবা চাপ প্রয়োগ করলে এত সহজে সংকুচিত হয় না। এর কারণ এই পদার্থের আন্তঃকণা আকর্ষণ বল অনেক বেশী।
প্রত্যেক পদার্থের কণাগুলো মাঝে এক আকর্ষণ বল থাকে একে আন্তঃকণা আকর্ষণ বল বলে।কঠিন পদার্থের আন্তঃকণা আকর্ষণ বল বেশী বলে এর কণা গুলো খুব কাছাকাছি থাকে তাই এটাকে সংকুচিত করা খুব কষ্টের। নিচে পেরা আকারে কঠিন পদার্থের বৈশিষ্ট উল্লেখ করা হলো।
- নির্দিষ্ট আকার আছে।
- নির্দিষ্ট ভর আছে।
- জায়গা দখল করে
- বল প্রয়োগ করলে বাধা দান করে।
- আন্তঃকণা আকর্ষণ শক্তি অনেক বেশী।
- তাপ দিলে এটি প্রসারিত হয়।
২। তরল পদার্থঃ

যে পদার্থের নির্দিষ্ট ভর এবং নির্দিষ্ট আয়তন আছে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার নেই তাকে তরল পদার্থ বলে। তরল পদার্থকে যেই পাত্রে রাখা হয় সেটি সেই পাত্রের আকার ধারণ করে। নিচে তরল পদার্থের কিছু বৈশিষ্ট দেয়া হলোঃ
- নির্দিষ্ট আয়তন আছে।
- নির্দিষ্ট ভর আছে।
- তবে এর নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই।
- চাপ প্রয়োগ করলে তরল পদার্থের আয়তন হ্রাস পায়।
- তাপ প্রয়োগ করলে এর আয়তন বৃদ্ধি পায়।(কঠিন পদার্থের তুলোনায় অধিক হারে।)
- অভিকর্ষ বল অনুযায়ী এটি নিচের দিকে গড়িয়ে চলে।
৩।গ্যাসীয় বা বায়বীয় পদার্থঃ
বায়বীয় পদার্থ(Gases)
যে পদার্থের নির্দিষ্ট ভর আছে কিন্তু নির্দিষ্ট আকার কিংবা নির্দিষ্ট আয়তন নেই তাকে বায়বীয় পদার্থ বলে।এই পদার্থে বিশেষত্ব হলো, এটিকে যেকোনো পরিমাণে যেকোনো পাত্রে রাখা যায় এবং এটি পাত্রের পুরো যায়গা দখল করবে।যেমন, একটি সিলিন্ডারে ১২ কেজি গ্যাস রাখা হয় এবং বায়বীয় পদার্থ পুরো সিলিন্ডার জুড়ে অবস্থান করে।
কিন্তু একই সিলিন্ডারে ইচ্ছা করলে আমরা ১২ কেজিএ বেশী গ্যাস রাখতে পারবো এবং সেখানেও বায়বীয় পদার্থ পুরো সিলিন্ডার জুড়ে অবস্থান করবে। নিচে বায়বীয় পদার্থের কিছু বৈশিষ্ট দেয়া হলোঃ
- বায়বীয় পদার্থ নির্দিষ্ট জায়গা দখল করে
- এটির নির্দিষ্ট ভর আছে।
- কিন্তু এটির নির্দিষ্ট আকার ও আয়তন নেই।
- তাপ হ্রাস করে একে তরলে পরিণত করা যায়।
- চাপ প্রয়োগে সংকুচিত করা যায়।
এছাড়াও,
উপাদান ভেদে পদার্থের প্রকারভেদ
উপাদান ভেদে পদার্থকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ
১।মৌলিক পদার্থ।(Elements)
২।যৌগিক পদার্থ।(compounds)
১। মৌলিক পদার্থ
মৌলিক পদার্থ কাকে বলে, এটি প্রশ্নে আসলে সাধারণভাবে এর উত্তর টা হবে,
যে পদার্থকে ভাঙলে সে পদার্থ ছাড়া অন্য কোনো পদার্থ পাওয়া যায় না তাকে মৌলিক পদার্থ বলে। রসায়নের ভাষায় একে মৌল বলে। যেমন, আপনি যদি সোনাকে ভাঙতে চান তাহলে সেখানে সোনা ছাড়া আর কিছু পাবেন না। লোহা কিংবা তামার ক্ষেত্রেও তাই। তাই এগুলোকে আমরা মৌলিক পদার্থ বলতে পারি।
এ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ১১৮ টি মৌলিক পদার্থ আবিষ্কৃত হয়েছে। এর মধ্যে ৯৮ টি মৌল বা মৌলিক পদার্থ প্রাকৃতিক পরিবেশে পাওয়া যায় বাকিগুলো বিভিনো পবেষণাগারে তৈরি করা হয়।
২।যৌগিক পদার্থঃ
যৌগিক পদার্থ কাকে বলে? এর উত্তরে আমরা বলতে পারি, যে সকল পদার্থ দুই কিংবা এর অধিক মৌলিক পদার্থ নিয়ে গঠিত তাকে যৌগিক পদার্থ বলে।এর উদাহরণ হিসেবে আমরা বলতে পারি, পানির কথা। পানি হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন নামক দুইটি মৌলিক পদার্থ দিয়ে তৈরি তাই পানিকে যৌগিক পদার্থ বলা হয়।
আজকে এ পর্যন্তই।
আমাদের শেষ কথা,
আমাদের এই পোষ্টটিতে যেসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে সেগূলো হলো পদার্থ কাকে বলে, পদার্থ কাকে বলে class 4, পদার্থ কাকে বলে কত প্রকার ও কি কি, গ্যাসীয় পদার্থ কাকে বলে, কঠিন তরল ও বায়বীয় পদার্থ কাকে বলে। এগুলো আমরা যথার্থ পরিমাণে তথ্য বহুল লেখার মাধ্যমে তুলে ধরেছি। এছাড়াও, মৌলিক পদার্থ ও যৌগিক পদার্থ কাকে বলে, পদার্থ কাকে বলে বাংলায়
এসব প্রশ্নের উত্তর ও দেয়া হয়েছে। আমাদের কাছে কোনো প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই কমেন্ট এ জানাবেন। আসসালামু আলাইকুম।